নির্দেশনা

শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়ষ্কদের এক বা একাধিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নিম্নবর্নিত অবস্থায় মেরোপেক্স ইনজেক্শন নির্দেশিত-
  • নিউমোনিয়া এবং নসোকোমিয়াল নিউমোনিয়া
  • মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ
  • ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল ইনফেকশন
  • স্ত্রীপ্রজননতন্ত্রের ইনফেকশন যেমন এন্ডোমেট্রাইটিস এবং পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ
  • চর্ম ও চর্ম সংক্রান্ত সংক্রমণ
  • মেনিনজাইটিস
  • রক্তের সংক্রমণ
  • ফুসফুসের সংক্রমণসহ সিস্টিক ফাইব্রোসিস
  • ফেব্রাইল নিউট্রোপেনিয়া রোগীদের সংক্রমণের প্রায়োগিক চিকিৎসায়।

ফার্মাকোলজি

মেরোপেনেম হচ্ছে কার্বাপেনেম এ্যান্টিবায়োটিক যা ইনজেক্শন হিসাবে ব্যবহারের জন্য। এটি ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর সংশ্লেষন বাধাগ্রস্থ করার মাধ্যমে ব্যাকটেরিসাইডাল কার্যকারিতা প্রদর্শন করে। এটি ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর অতিক্রম করে, এটি সবধরণের সেরিণ বেটা-ল্যাকটামেজের প্রতি কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী। এছাড়াও পেনিসিলিন বাইন্ডিং প্রোটিন এর প্রতি লক্ষনীয় আসক্তির ফলে এটি বিস্তৃত বর্ণালীর গ্রাম-পজেটিভ ও গ্রাম-নেগেটিভ, এ্যরোবিক ও এনএ্যরোবিক ব্যাকটেরিয়ার প্রতি মেরোপেনেমের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাকটেরিসাইডাল কার্যকারিতা দেখায়।

ঔষধের মাত্রা

সংক্রমণের ধরন, অবস্থা এবং রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে মাত্রা ও চিকিৎসার সময়সীমা নির্ধারিত হবে। প্রতিদিনের নির্দেশিত মাত্রা নিম্নে দেয়া হলো-

প্রাপ্তবয়স্কঃ
  • সাধারণ মাত্রা হল ৫০০ মিঃগ্রাঃ থেকে ১ গ্রাম শিরাপথে প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • নিউমোনিয়া, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ, স্ত্রীপ্রজননতন্ত্রের ইনফেকশন যেমন এন্ডোমেট্রাইটিস, পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ, চর্ম ও চর্ম সংক্রান্ত সংক্রমণঃ ৫০০ মিঃগ্রাঃ আইভি প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • নসোকোমিয়াল নিউমোনিয়া, পেরিটোনাইটিস, নিউট্রোপেনেক রোগীদের সংক্রমণ এবং রক্তের সংক্রমণঃ ১ গ্রাম আইভি প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল ইনফেকশনসঃ ৫০০ মিঃগ্রাঃ থেকে ১ গ্রাম প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • সিস্টিক ফাইব্রোসিসঃ ২ গ্রাম পর্যন্ত ৮ ঘন্টা পরপর।
  • মেনিনজাইটিসঃ ২ গ্রাম আইভি ৮ ঘন্টা পরপর।
শিশুঃ
  • ৩ মাস-১২ বছরঃ রোগীর অবস্থা, সংক্রমনের ধরন এবং ব্যাকটেরিয়ার সংবেদনশীলতার উপর ভিত্তি করে শিরাপথে ১০ থেকে ৪০ মিঃগ্রাঃ /কিঃগ্রাঃ প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল ইনফেকশনঃ ২০ মিঃগ্রাঃ /কিঃগ্রাঃ প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • সিস্টিক ফাইব্রোসিস (৮-১৮ বছর): ২৫-৪০ মিঃগ্রাঃ /কিঃগ্রাঃ প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • মেনিনজাইটিসঃ শিরাপথে ৪০ মিঃগ্রাঃ/কিঃগ্রাঃ প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • ফেব্রাইল নিউট্রোপেনিয়াঃ ২০ মিঃগ্রাঃ/কিঃগ্রাঃ প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর।
  • ৫০ কিঃগ্রাঃ এর অধিক ওজনের শিশুঃ প্রাপ্ত বয়স্কদের সমান মাত্রায়।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে যকৃত বা বৃক্কের অসমকার্যকারিতার উপস্থিতি বিরল।

সেবনবিধি

মেরোপেনেম আইভি ইনফিউশন হিসাবে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ধরে অথবা বোলাস ইনজেকশন হিসাবে ৩ থেকে ৫ মিনিট ধরে প্রয়োগ করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

প্রোবিনিসিড মেরোপেনেমের নিঃসরণ কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করে যা মেরোপেনেমের এলিমিনেশন হাফ লাইফ এবং রক্তরসে ইহার ঘনমাত্রা বৃদ্ধি করে। মেরোপেনেম সিরাম ভ্যালপ্রোইয়িক এসিড লেভেল কমাতে পারে তাই কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সাবথেরাপিউটিক লেভেল পাওয়া যেতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

যে সমস্ত রোগী মেরোপেনেমের প্রতি সংবেদনশীল তাদের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

মেরোপেনেম সাধারনত সুসহনীয়। এছাড়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন- ইনফ্লামেশন, থ্রম্বোফ্লেবাইটিস, ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা করা, ত্বকের বিক্রিয়া যেমন- র‌্যাশ, প্রোরাইটিস, আর্টিকারিয়া, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথা হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরী বি। যদিও গর্ভবতী মহিলাদের উপর পর্যাপ্ত ও সুনিয়ন্ত্রিত ক্লিনিকাল স্ট্যাডি নেই, তবুও গর্ভাবস্থায় যদি একান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে দেয়া যেতে পারে। মেরোপেনেমের ব্যবহারে স্তন্যদানকালে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

সতর্কতা

যদি মেরোপেনেমের প্রতি কোন এলার্জিক ক্রিয়া দেখা দেয় তবে মেরোপেনেমের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যকৃতের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে মেরোপেনেমের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রান্সএমাইনেজ এবং বিলিরুভীনের মাত্রা সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বৃক্কের অসমকার্যকারিতায়: যেসব রোগীদের ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স ৫১ মিঃলিঃ/মিনিট এর চেয়ে কম, তাদের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। 

যকৃতের অসমকার্যকারিতায়: মাত্রা পরিবর্তনের কোন প্রয়োজন নাই। হেমোডায়ালাইসিসের রোগীদের ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস শেষ হওয়ার পর মেরোপেনেমের ব্যবহার শুরু করতে হবে।

বয়স্ক: ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স ৫১ মিঃলিঃ/মিনিট এর কম না হলে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা পরিবর্তনের কোন প্রয়োজন নেই।

শিশু: ৩ মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে মেরোপেনেমের কার্যকারিতা ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠিত নয়।

মাত্রাধিক্যতা

অসাবধানতা বশতঃ মাত্রাধিক্যতা হতে পারে। বিশেষ করে বৃক্কের অসমকার্যকারিতা রোগীদের ক্ষেত্রে। মাত্রাধিক্যতা হলে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। স্বাভাবিক রোগীদের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি রেনাল নিঃসরন হবে। বৃক্কের অসমকার্যকারিতার রোগীদের ক্ষেত্রে হেমোডায়ালাইসিস মেরোপেনেম এবং এর মেটাবলাইট দূরীভূত করবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Other beta-lactam Antibiotics

পুনর্গঠন প্রণালী

সলিউশন প্রস্তুতিঃ

ইন্ট্রাভেনাস পথে প্রয়োগ: সরবরাহকৃত স্টেরাইল ওয়াটার ফর ইনজেকশন এর সাহায্যে ইনজেকশন ভায়াল প্রস্তুত করতে হবে। পাউডার ঝাঁকিয়ে দ্রবীভূত করতে হবে এবং একটি পরিস্কার, স্বচ্ছ অথবা হালকা হলুদ বর্ণের দ্রবণ পাওয়া যাবে।

ইন্ট্রাভেনাস ইনফিউশন প্রয়োগ: মেরোপেনেম আইভি উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত করে সরাসরি ইন্ট্রাভেনাস ইনফিউশন পথে প্রয়োগ করা যাবে। উপযুক্ত দ্রাবকে প্রয়োজন অনুযায়ী ইনফিউশনের জন্য লঘু করে (৫০মিঃলিঃ থেকে ২০০ মিঃলিঃ) নেয়া যাবে।

উপযুক্ত দ্রাবক সমূহ: ০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড সলিউশন, ৫% অথবা ১০% Glucose সলিউশন, ৫% Glucose সলিউশন এর সাথে ০.০২% সোডিয়াম বাইকার্বনেট, ০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং ৫% Glucose সলিউশন, ৫% Glucose এর সাথে ০.২২৫% সোডিয়াম ক্লোরাইড সলিউশন, ৫% Glucose এর সাথে ০.১৫% পটাশিয়াম ক্লোরাইড সলিউশন, ২.৫% অথবা ১০% ম্যানিটল সলিউশন, ৫% Glucose ইন্ট্রাভেনাস দ্রবনের সহিত নরমোসল-এম।

সদ্য প্রস্তুতকৃত ইনজেকশন ব্যবহার করতে হবে। তবে ঔষধের কার্যকারিতা ২৫ সেঃ তাপমাত্রায় ৩ ঘন্টা ও ৫ সেঃ তাপমাত্রায় ১৩ ঘন্টা বজায় থাকে।

সংরক্ষণ

ভায়াল আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে (৩০সেঃ তাপমাত্রার নিচে) রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।